রাখী গুলজারের দুর্দান্ত প্রত্যাবর্তন: কর্পোরেট গল্পে এক মায়ের ছায়া ‘আমার বস’ ছবিতে
‘Aamar Boss’ সিনেমায় রাখী গুলজারের পারফরম্যান্স টলিউডে এক নতুন সংবেদন তৈরি করলো
২০২৫ সালের মাদারস ডে (৯ই মে)-তে মুক্তি পাওয়া বাংলা সিনেমা ‘আমার বস’ (Aamar Boss) ইতিমধ্যেই বক্স অফিসে হিট, দর্শকমনে তোলপাড় এবং সমালোচকদের বাহবা—সবকিছু একসাথে এনে ফেলেছে। এই ছবির মাধ্যমে ঘটেছে রাখী গুলজারের দুর্দান্ত প্রত্যাবর্তন। অনেকদিন পর বড় পর্দায় তিনি ফিরলেন নিজের সুবিন্যস্ত অভিনয়, গভীর আবেগ এবং অদ্ভুত এক স্থিরতা নিয়ে—যা এই প্রজন্মের কর্পোরেট ব্যস্ত জীবনের সঙ্গে গভীরভাবে মিশে গেছে।
ছবির গল্প আধুনিক কর্পোরেট ওয়ার্ল্ড-এর প্রেক্ষাপটে দাঁড়িয়ে তৈরি হলেও, এর কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে ‘ইনক্লুসিভ প্যারেন্টিং’, ‘জেনারেশনাল গ্যাপ’, আর ‘ওয়ার্কপ্লেস হিউম্যানিটি’-র মতো স্পর্শকাতর অথচ সমসাময়িক থিম। পরিচালনায় ছিলেন বাংলা ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রির অন্যতম নির্ভরযোগ্য জুটি নন্দিতা রায় ও শিবপ্রসাদ মুখার্জি। দু’জনেই আগে ‘কন্ঠ’, ‘হামি’, ‘বেলাশুরু’-র মতো ছবি দিয়ে মানুষের মনের কথা বলেছেন, আর এবারও তার ব্যতিক্রম হয়নি।
কাহিনির মূল সুর:
‘আমার বস’ কেবল একটি অফিস-জীবনের গল্প নয়। বরং এটি এমন এক বস-এর গল্প, যিনি অফিসকে কেবল মাত্র একটা কাজের জায়গা হিসেবে দেখেন না—তিনি এটি একটি সম্প্রদায়, একটি পরিবার হিসেবে গড়ে তুলতে চান। রাখী গুলজার এখানে অভিনয় করেছেন অর্জুনা সেনগুপ্ত চরিত্রে—এক অভিজ্ঞ, সংবেদনশীল অথচ দৃঢ় মনোভাবাপন্ন মহিলা, যিনি তার অধীনস্থ তরুণ কর্মীদের শুধু ম্যানেজ করেন না, তাদের মেন্টর, বন্ধু এবং অভিভাবক হিসেবেও পাশে থাকেন।
ছবির সেকেন্ডারি প্লটে আমরা দেখতে পাই একটি তরুণী কর্মচারীর single mother হিসেবে office-এ টিকে থাকার লড়াই, এবং কীভাবে ‘অর্জুনা সেনগুপ্ত’ তাকে সহানুভূতির সঙ্গে সমর্থন করেন—একটি মাতৃসুলভ মানবিক সম্পর্ক গড়ে ওঠে কর্মস্থলে।
আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি:
ছবিটি শুধু বক্স অফিসেই ঝড় তোলে না, এটি IFFI (International Film Festival of India) এবং চেন্নাই ইন্টারন্যাশনাল ফিল্ম ফেস্টিভাল-এও প্রদর্শিত হয়। সেখানে ছবির থিম, রাখী গুলজারের অনবদ্য অভিনয় এবং ফিল্মের সাবটেক্সচুয়াল নারীবাদকে আন্তর্জাতিক সমালোচকরাও সাধুবাদ জানান।
বক্স অফিস পারফরম্যান্স:
মুক্তির পরপরই মাত্র ৩ সপ্তাহে ‘আমার বস’ বাংলা সিনেমার ইতিহাসে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ আয়কারী ছবি হয়ে ওঠে ২০২৫ সালে। ছবিটি বিশেষ করে ৩০+ এবং কর্পোরেট ব্যাকগ্রাউন্ডের দর্শকদের মধ্যে ব্যাপক জনপ্রিয়তা পায়, কারণ তারা নিজের জীবনের অনেক কিছুই এই সিনেমায় খুঁজে পান।
সিনেমার গভীর বার্তা:
এই ছবি বর্তমান প্রজন্মকে শেখায়, কিভাবে সহানুভূতি, অভিজ্ঞতা, এবং মানবিক দৃষ্টিভঙ্গি কর্পোরেট বিশ্বেও একটি বড় পার্থক্য আনতে পারে। রাখী গুলজারের চরিত্রটি যেন আমাদের প্রত্যেকের অফিসে থাকা উচিত এমন একজন মানুষ—যিনি আমাদের ভুল শুধরে দেন, কিন্তু ভালোবাসাও দেন।
AI in Tollywood: Can Technology Preserve Bengali Identity on Screen?
0 Comments